অপরুপ
রুপবৈচিত্রের দেশ আমাদের বাংলাদেশ। শীতকাল
হলো দেশের ঋতুচক্রের পঞ্চম ঋতু।
দরিদ্র দেশ হিসেবে এই
শীত নানা দূর্ভোগ ও
সমস্যা নিয়ে আগমন করলেও
সংগে নিয়ে আসে বিশাল
এক আনন্দ উল্লাসের নানা
উপকরন। যা
আমাদের মনকে আনন্দে ভরিয়ে দেয়।
কুয়াশা
মোড়া শীতের সকাল। যা গ্রামের মানুষের পরিচিত দৃশ্য।
হাড় কনকনে শীতে জবুথবু
একটি গ্রামের ভোর। কুয়াশা
ঢাকা কিষান বাড়ির উঠোনের
একপ্রান্তে গনগনে জলন্ত উনুন। সে
আগুনের আঁচে উনুনের ধার
ঘেষে বসে আছে বাড়ির
ছেলেবুড়ো সকলে।
শৈশবে
শীতের
এক আলাদা অনুভূতি ছিল।
কুয়াশায় আচ্ছন্ন শীতের সকাল! মুখ
খুললেই ধোঁয়া বের হওয়া
দেখে অবাক হয়ে যাওয়া।
ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, পুলি,
কুলি নানা ধরনের পিঠা।
ঘুম ভাঙ্গলেও বিছানা ছেড়ে উঠতে
মন না চাওয়া। তুলে
রাখা তোরঙ্গের লেপ কাঁথা কম্বলের
সে এক দারুন মজা।
রোদে দেওয়া ওম। তুলোর
ফাঁকে ঢুকে থাকা রোদের
গন্ধ। সন্ধ্যাকাশে দিগন্ত জুড়ে সারি
বেঁধে উড়ে চলা অতিথি
পাখির দল। কিচির-মিচির
শব্দ শীতের প্রকৃতিকে করে
তুলতো অন্যন্য রুপবতী নারীরুপে।
যদিও
শহরের জীবনে শীতের আবেদন
আলাদা। শহরে থেকে গ্রামের প্রকৃত শীতের মজা
পাওয়া সম্ভব না। বাংলার পথে-প্রান্তরে, মাঠেঘাটে তাকালেই চোখে পড়ে খেজুরগাছের
আগায় ঝুলছে ছোট্ট রসের
হাড়ি। কোথাও গাছ থেকে
রস নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাছিরা। আর ফসলের মাঠজুড়ে
সোনালি আভায় সকাল সন্ধ্যা
জমে হিম হিম কুয়াশা।
খাবারের খোঁজে খাল-বিল
আর মাঠে-ঘাটে ঝাঁকে
ঝাঁকে নামে সাদা বকের
ঝাঁক। যা দেখতে খুব মজা লাগে।
ঝাঁকে ঝাঁকে সাদাফুলের মত
বসে থাকা বকের শুভ্রতা
সেও এক অপরূপা দৃশ্য।
গ্রামও শহরের হাঁট বাজারগুলোতে
সব্জীপসারীর ডালায় ডালায় থরে
থরে সাজানো শীতের সবজী,
ফুলকপি, নতুন আলু, বাঁধাকপি, মূলা, ওলকপি, গাজর,
টমেটো চোখ জুড়ায়, মন
ভরায়।
শীতের
আরেক সৌন্দর্য্য
বিরাজ করে সরিষা ক্ষেতে।
মাঠের পর মাঠ জুড়ে
ফুটে থাকা হলুদ সরিষার
ফুল যেন বিছিয়ে রাখে
হলুদ ফুলেল চাদর। আর
সেই ফুল কলিদের উপর
উড়ে চলা রঙ্গিন প্রজাপতি
আর মৌমাছিদের মেলা মন হরন
করে।
পৃথিবীর
যেখানেই যাই না কেনো
সে সৌন্দর্য্যের তুলনা হয়না বুঝি
আর কিছুর সাথেই। আমাদের দেশের মত এত সুন্দর দেশ আর কোথাও দেখতে
পাওয়া যায় না। আর যাবেও না।
Post a Comment